চার বছর মোবাইলে প্রেম অতঃপর লঞ্চ ও হোটেলে নিয়ে প্রেমিকাকে ধর্ষণ!

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে এক কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রামগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর ইউপির মধ্যদরবেশপুর গ্রামে।
সোমবার (২০ এপ্রিল) এ ঘটনায় ধর্ষিতা বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মামলার আসামি হলেন মধ্য দরবেশপুর নোয়া বাড়ির আব্দুর রশিদের বখাটে ছেলে আরিফ হাসান।
এরই প্রেক্ষিতে রামগঞ্জ থানা পুলিশ ধর্ষিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পূর্ব দরবেশপুর গ্রামের লক্ষীপুর সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রীর সঙ্গে মধ্য দরবেশপুর নোয়া বাড়ির আব্দুর রশিদের বখাটে ছেলে কাতার প্রবাসী আরিফ হাসানের ২০১৬ সাল থেকে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো।
এরই মধ্যে আরিফ হাসান গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসে। আসার পর থেকে বিভিন্ন সময় আরিফ হাসান কলেজছাত্রীকে শারীরিকভাবে মেলামেশা করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু কলেজছাত্রী বারবার তা প্রত্যাখান করে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে।

গত ৮ মার্চ আরিফ বিয়ের করার কথা বলে ওই ছাত্রীকে চাঁদপুর হয়ে লঞ্চযোগে ঢাকার কমলাপুরে সিটি প্যালেস হোটেলে নিয়ে যায়। এরইমধ্যে লঞ্চে ও হোটেলে কয়েকবার ধর্ষণ করে। কিন্তু ৯ মার্চ সকালে বিয়ে করার কথা থাকলেও আরিফ হাসান তাকে বিয়ে না করে সোজা সায়েদাবাদ বাস কাউন্টারে এনে জোর করে গাড়িতে তুলে দিয়ে দেশের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে ওই ছাত্রী বাড়িতে এসে এলাকার লোকজনদের ঘটনাটি জানায়।
এক পর্যায়ে স্থানীয় রহমত উল্লাহ, মামুন মাস্টার, আবুলশ কাশেম, জহির, আরমান, জসিমসহ ১ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত দফায় দফায় সালিশ বৈঠকের নাম করে সময়ক্ষেপণ করে ধর্ষককে জরিমানা করে ছেড়ে দেয়ার দিদ্ধান্ত দিলে কলেজছাত্রী তা প্রত্যাখান করেন।
ধর্ষিতা কলেজছাত্রী বলেন, শিক্ষিত মেয়ে হিসেবে আমি সবসময় সতর্ক ছিলাম। কিন্তু লঞ্চে উঠার পর সে আমার সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করলে আমি বাধা দেই। পরে সে বলে সদরঘাট নেমেই বিয়ের কাজ সেরে ফেলবে। এ আশ্বাস দিয়ে কয়েকবার শারীরিক মেলামেশা করে। সদরঘাট নেমে বলে হোটেলে উঠে তারপর বিয়ে করবে।
এভাবে আরিফ যে আমার সঙ্গে বারবার এমন প্রতারণা করবে তা কখনো ভাবিনি। এছাড়াও সালিশ বৈঠকে বিয়ে পড়ানোসহ সমাধানের কথা বলে বারবার সময়ক্ষেপণ করে আমাকে তাৎক্ষণিক চেকআপের জন্য হাসপাতাল পর্যন্ত যেতে দেয়নি।
অভিযুক্ত ধর্ষক আরিফ হাসানের সঙ্গে মোবাইলে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রামগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, কলেজছাত্রীর অভিযোগের আলোকে নারী শিশু নির্যাতন আইনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *