আ.লীগ নেত্রী স্বামীকে দিয়ে ধর্ষণ করালেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে!


নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটের জৈন্তাপুর জৈন্তাপুর উপজেলায় লিডিং ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের দৃশ্য মুঠোফোনে রেকর্ড করার অভিযোগে অভিযুক্ত স্বামীসহ সুমি বেগম (৩০) নামের এক আওয়ামী লীগ নেত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল শনিবার ভোররাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করেন র‍্যাব-৯-এর সদস্যরা।


গ্রেপ্তারকৃত সুমি বেগম জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর স্বামী নিজপাট এলাকার কমলাবাড়ী মোকামটিলা এলাকার বাসিন্দা কয়েছ আহমদ (৩৫) রেনু মিয়ার ছেলে। ভিকটিম তরুণীর বাড়িও একই গ্রামে। ওই তরুণী সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সমাজ কল্যাণ বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ ও সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির এলএলবি প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। সুমী ও তার স্বামী সম্পর্কে ওই তরুণীর খালা ও খালু।


জৈন্তাপুর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের বেসরকারি লিডিং ইউনিভার্সিটি বন্ধ থাকায় ওই তরুণী বর্তমানে জৈন্তাপুরে নিজ বাড়িতে রয়েছেন। খালা সুমি বেগম প্রায়ই ওই ছাত্রীকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে নানা গল্প করতেন। গত ২ মে ইফতারের দাওয়াত দিয়ে ওই তরুণীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান সুমি। ইফতার শেষে রাত ৮টার দিকে সুমি বেগম ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে চায়ের সাথে ঘুমের ও নেশা জাতীয় ওষুধ মেশিয়ে খেতে দেন। চা খেয়ে এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়েন ওই তরুণী। এরপর সুমি বেগমের সহায়তায় তার স্বামী কয়েছ আহমদ ভিকটিমকে ধর্ষণ করে এবং সুমি বেগম মুঠোফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। এরপর ঘণ্টাখানেক পর ওই ছাত্রীর চেতনা ফিরে এলে আসামি কয়েস আহমদকে তার পাশে শোয়া অবস্থায় দেখতে পায়।


এ সময় তরুণী টের পেয়ে গেলে চিৎকার করতে চেষ্টা করায় আসামি কয়েস আহমদ ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে রাখে। পরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মুক্ত হয়ে ওই তরুণী তার পিতা-মাতাকে খবর দেয়।


পুলিশ জানায়, পরে ওই তরুণীর বাবা এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান এবং আত্মীয়-স্বজনের পরামর্শে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেন।


পরে গত ৪ মে এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে জৈন্তাপুর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ ও নারী এবং শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২০। 


পরে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলা রেকর্ড করলে সুমি ও কয়েস বাড়ি ছেড়ে পালায়। মামলা রেকর্ডের পর আসামিদের ধরতে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু তাদের খোজ পায়নি। তাদের ধরতে অভিযানে শুরু করে র‌্যাবও।


গতকাল র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয় গত শুক্রবার (৮ মে) মধ্যরাতে  সিলেট থেকে নারীলোভী লম্পট কমলাবাড়ী মোকামটিলা গ্রামের রেনু মিয়ার ছেলে কয়েস আহমদ ও তার স্ত্রী সুমি বেগমকে আটক করা হয়।


জৈন্তাপুর থানার ওসি শ্যামল বনিক জানান, সুমি মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পরিচয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কয়েছের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।


গ্রেফতারের পর আসামিরা ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করেছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

Similar Posts