নিজস্ব প্রতিনিধি:: দূর সম্পর্কের ১৩ বছরের নাতনিকে বিয়ে করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছেন কুমিল্লার রিকশাচলক সামশুল হক। অদ্য এ কার্যকলাপের জন্য গ্রেপ্তারও হয়েছেন তিনি। তার মতো রাজশাহী বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জের একজন পৌর মেয়রও প্রতিবেশী নাতনিকে বিয়ে করেছেন। তবে বছরখানেক আগে বিয়েটি করলেও রিকশাচালক সামশুল হকের বিয়ের কথাটা ভাইরাল হওয়ার পর জানাজানি হয়েছে মেয়রের বিয়ের খবরও। এরপর থেকে শুরু হয়েছে তোলপাড়।
ওই মেয়রের নাম আবদুল মালেক। এ ছাড়া বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতিও তিনি। তার বিবাহিত স্ত্রী শারমিন খাতুনের বয়স এখন ১৮ বছর। প্রায় ৬০ বছর বয়সী এই নেতার অসম বিয়েতে বিব্রত দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তবে প্রভাবশালী হওয়ায় তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি।
রিকশাচালক সামশুল হকের অসম প্রেমের বিয়ে নিয়ে গুঞ্জন ভাইরাল হওয়ার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক নেতা মেয়র আবদুল মালেক ও তার স্ত্রী শারমিন খাতুনের একটি ছবি পাঠিয়েছেন এই প্রতিবেদকের কাছে। জানিয়েছেন এ বিয়ের অদ্যপ্রান্তও।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় ওই নেতার দেয়া ভাষ্যমতে, মেয়র আবদুল মালেকের (৬০) বাড়ি পৌরসভার সূর্যপাড়া মহল্লায়। তার স্ত্রী শারমিনের (১৮) বাবার নাম ফজলুর রহমান। মেয়র এবং তার বাড়ি কাছাকাছি। মেয়রের বাড়িতেই কাজ করতেন মেয়ের বাবা ফজলুর। তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে শারমিন বিয়ের আগে মেয়রকে নানা বলেই ডাকত। প্রায় দু’বছর আগে তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন মেয়র এরপর বিয়ে করে নেন শারমিনকে। এ অসম প্রেমের সম্পর্কের বিয়ে নিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের একাধিকবার তোপের মুখে পড়েন তিনি।
এ বিয়ের ফলে মেয়রের দুই ছেলে ফজলুর রহমানের বাড়িতে হামলাও চালিয়েছেন বেশ কয়েকবার। কিন্তু এরই মধ্যে বছরখানেক আগে ফজলুর রহমানের মেয়ে শারমিনকে কোর্টে নিয়ে চুপিসারে বিয়ের কাজটি সেরে ফেলেন মেয়র আবদুল মালেক।
তখন বাগমারার চাঁনপাড়া আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে কেবল এসএসসি পাস করেছে শারমিন। বিয়ের পর মেয়র ভবানীগঞ্জ বাজারে একটি বাড়ি ভাড়া করে তাকে নিয়ে থাকতেন। এতদিন মেয়র মালেকের বিয়ের খবর অনেকটা চাপা ছিল। তবে এতে ঘি ঢেলে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কুমিল্লার রিকশাচালক সামশুল হকের বিয়ে। এখন আবারও আলোচনা ও নতুন করে গুঞ্জন চলছে মেয়র মালেকের বিয়ে নিয়ে।
চাঁনপাড়া আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা বেগম বলেন, মেয়েটি তার স্কুলের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। এসএসসি পাসের পর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পরই শুনতে পান মেয়রের সঙ্গে শিক্ষার্থী শারমিনের বিয়ে হয়েছে। তখন শারমিনের বয়স ১৬ বা ১৭ হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
এ নিয়ে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, আগে তিনি মেয়রের বিয়ের খবরটি শোনেননি। তবে এখন আলোচনা শুনেছেন। এ নিয়ে কোনো অভিযোগ পাননি বলেও জানান তিনি।
জানতে চাইলে শারমিনকে বিয়ের কথা স্বীকার করেন মেয়র আবদুল মালেক। তবে শারমিন এখন তার সঙ্গে থাকতে চাইছে না বলে দাবি করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ছোট মেয়ে তাই সংসার করতে পারবে না। সে জন্য সে তার বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছে। তবে বিয়ের সময় শারমিনের বয়স ১৮ ছিল বলেও দাবি করেন মেয়র। কথা বলতে শুক্রবার (১৫ মে) বিকালে শারমিনের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হয়। তবে কোনো কথা বলতে চাননি তিনি। বন্ধ পাওয়া গেছে শারমিনের বাবা ফজলুর রহমানের মোবাইল নম্বরও।