পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বার রহস্যময় মৃত্যু: স্বামীসহ আটক ৫


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। হত্যা সন্দেহে বাড়ি ঘেরাও করে মৃতের স্বামী ও শাশুড়িসহ পরিবারের ৫ জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা।

শুক্রবার (১ মে) দুপুরে উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের আজমাতা মাদারেরকুটি গ্রাম থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূর নাম শারমীন আক্তার (২২)। 

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ১০ মাস আগে প্রতিবেশি আবুল কাশেমের ছেলে দুলাল হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় শের আলীর মেয়ে শারমীন আক্তারের। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবিতে দুলাল ও তার পরিবারের সদস্যরা শারমীনকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। এরই মধ্যে শারমীন অন্তঃসত্ত্বা হন। 

ঘটনার দিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি বাড়ির পাশে খড়ি কাটছিলেন। এসময় তার সাথে যৌতুকের টাকা পরিশোধ নিয়ে ননদ ফাতেমা (২৮) এবং কুলছুমের (২৪) ঝগড়া-বিবাদ হয়। এটি শুনে শারমীনের জেঠা আব্দুল হানিফ (৬০) ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে বাবার বাড়ি নিয়ে যেতে চান। শারমীনও তার জেঠার সাথে যেতে চাইলে স্বামী ও পরিবারের লোকজন জোর করে শারমীনকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়।

প্রায় দেড় ঘণ্টা পর শারমীনের শ্বশুর বাড়ির লোকজন চিৎকার করে বলতে থাকে, শারমীন গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এটি শুনে তার বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা ঘরে ঢুকে দেখতে পায়, শারমীনের নিথর দেহ বিছানায় পড়ে আছে। তার গলায় ফাঁসের কোনো দাগ না থাকলেও শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।

এরপর শারমীনকে হত্যা করা হয়েছে সন্দেহে স্থানীয়রা তার স্বামী দুলাল, শাশুড়ি খাদিজা বেগম (৫০), ননদ ফাতেমা (২৮), কুলছুম (২৪) ও দেবর হাফিজুর রহমানকে (১৮) আটক করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে আগেই পালিয়ে যান শারমীনের শ্বশুর আবুল কাশেম। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের কাছে আটকদের হস্তান্তর করেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন কবীর  জানান, ‘মৃতদেহসহ আটক ব্যক্তিদের থানায় নেওয়া হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত ও ঘটনার তদন্ত ছাড়া নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকান্ড। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *