যে গ্রামে সুন্দরী মেয়ে থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করতে চায় না কেউ!

ছবিঃ সংগৃহীত 
অনলাইন ডেস্কঃ একটি গ্রামের কোনো মেয়েরই বিয়ে হচ্ছে না। কিন্তু কেন? তাদের ওপর কারও অভিশাপ নেই, নিজেদের কোনো শারীরিক সমস্যাও নেই। তাহলে কার জন্য আটকে আছে তাদের বিয়ে? 

নিশ্চয়ই এর আগে আপনি এমন কোনো গ্রাম দেখেননি, যে গ্রামের মেয়েদের বিয়ে করতে হবে শুনলেই ছেলেরা পালাতে শুরু করে। পাঠক, অনুমান করুন ছেলেদের এমন আপত্তির কারণ কী হতে পারে?

আবার সেই গ্রামের মেয়েরা যথেষ্ট সুন্দরী। গ্রামটিও একেবারে গণ্ডগ্রাম নয়, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। গ্রামের মানুষ ভালো-মন্দ মিলিয়ে সমান এমনতো সব গ্রামেই দেখা যায়। তারপরও এই গ্রামের সুন্দরী মেয়েদের ছেলেরা বিয়ে করতে চায় না।

তাছাড়া মেয়ে দেখতে ভালো। পড়াশোনাও করেছে। বিয়ের কথা বার্তাও ঠিকঠাক। বরপক্ষ-কনেপক্ষ রাজি বিয়েতে। বিয়ের প্রস্তুতিতে কোনো ত্রুটি নেই। তা সত্ত্বেও বিয়ে হচ্ছে না ওই গ্রামের সুন্দরী মেয়েদের।

এর কারণও অবাক করার মতো। জানলে অবাক হবেন আপনিও। ভারতের বিহার রাজ্যের ভোজপুরের রতনপুর গ্রামের তরুণীদের বিয়ে হচ্ছে না। কারণ তাদের বিয়েতে বাধ সাধছে শুধুমাত্র একদল বানর।


কথিত আছে, গ্রামে একটি ডাকাত দল সক্রিয় রয়েছে। তবে তারা কেউ মানুষ নয়, বানর! শুনে আপনার হাসি পেতে পারে। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে এ কথা সত্য। ভারতের ভোজপুর জেলার রতনপুর গ্রামের কথা প্রায়ই পত্রিকার পাতায় উঠে আসে এই বানর দলের কারণে।

কলকাতার সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিহারের রাজধানী পাটনা শহর থেকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভোজপুরের রতনপুর গ্রাম। রাস্তাঘাট মোটের উপর মন্দ নয়। উন্নতির আলো এক্কেবারে পৌঁছায়নি, তাও বলা যাবে না। তবে এই গ্রামে মূল সমস্যা  হলো বানর।
প্রায়শই এলাকায় তাণ্ডব চালায় বানররা। গ্রামবাসীদের কাছে ত্রাস বানর। আঁচড়ানো, কামড়ানোর মতো অত্যাচারের ঘটনা লেগেই আছে। গ্রামের লোকেরা আতঙ্কে প্রায় কাঁটা হয়েই থাকেন। বুঝে শুনে পা ফেলেন গ্রামবাসীরা।

এই গ্রামে বাসিন্দাদের তুলনায় বানরের সংখ্যা অনেক বেশি। গ্রামবাসীদের সবসময় আতঙ্কের মধ্যে রাখে এখানকার বানরের দল। বিয়ে কিংবা জন্মদিন এমনকি শ্রাদ্ধ (হিন্দুশাস্ত্রানুযায়ী পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে এবং তাদের আশীর্বাদ কামনায় দান-ধ্যান ও অতিথিভোজন অনুষ্ঠান) অনুষ্ঠানেও বানরের দল হানা দিতে দেরি করে না। সংঘবদ্ধ হয়ে এসে খাবার নষ্ট করে চলে যায়। ধাওয়া দিলে দাঁত-মুখ খিচিয়ে উল্টো তেড়ে আসে। ক্ষেপে গিয়ে আরও বেশি তুলকালাম কাণ্ড ঘটায়।

ছবিঃ সংগৃহীত 
বানরের আক্রমণের চেয়ে নিরাপদে থাকাটাই বেশি শ্রেয় মনে করেন পাত্রপক্ষ। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে ওই গ্রামে যেতে চায় না কোন পাত্র। যখন রতনপুর গ্রাম থেকে কোন বিয়ের প্রস্তাব আসে, তখন বর এবং তার পরিবার সুস্পষ্ট এই কারণ দেখিয়ে ঘটককে বিদায় করে দেয়। 

স্থানীয় প্রশাসন বিপর্যয় রোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কিন্তু বানরের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার কারণে তারা সফল হয়নি। বিশেষ করে কোনো আয়োজন উপলক্ষ্যে যখন ভালো-মন্দ খাবার তৈরি করা হয় তখন বানরগুলো হামলা চালায়। অতীতেও এই গ্রামে এভাবে অনেক বিয়ের অনুষ্ঠান ভুণ্ডল হয়ে গেছে।

বাইরে থেকে আসা লোকজনেরা যদিও এত কিছু জানেন না। তাই আচমকাই গ্রামে এসে একবার হামলার শিকার হন একদল মানুষ। তারা গ্রামে এসেছিলেন বরযাত্রী হিসাবে। হইচইয়ের ফলে বিরক্ত হয় বানরেরা। একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়ে বরযাত্রীদের ওপর।

বানরদের হামলায় নিহত হন অনেকে। পণ্ড হয়ে যায় বিয়ে। হামলায় জখমদের ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। ওই ঘটনার পর থেকে রতনপুর গ্রামে ছেলের বিয়ে দিয়ে আর বিপদ ডেকে আনতে চান না কেউই। তাই নিরুপায় অবস্থা কন্যাদায়গ্রস্ত বাবাদের।

তাদের বক্তব্য, ‘কেউ বরযাত্রী নিয়ে আসতে রাজি হচ্ছেন না। তাই আমাদের মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে না। ওরা কুমারী থেকে যাচ্ছে।’

বানরদের উৎপাতে অতিষ্ঠ গ্রামবাসীরা। মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বাধ্য হয়ে বনদফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা। কবে বানরের কবল থেকে মুক্তি পায় গ্রাম, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *