রাজশাহীতে বিয়েতে আপত্তি করায় পরকীয়া প্রেমিকার হাতে খুন


নিজস্ব প্রতিনিধি:: রাজশাহীর বাগমারার দক্ষিণ সাজুড়িয়া গ্রামে বিয়েতে আপত্তি করায় পরকীয়া প্রেমিকার হাতে খুন হয়েছেন পুকুর পাহারাদার আবদুস সালাম (৪৭)। 
স্বামী পরিত্যক্তা পরকীয়া প্রেমিকা শিরিন বেগম (৩৫) এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। সোমবার (১১ মে) দুপুরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন শিরিনা। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
গত শনিবার (৯ মে) দিবাগত রাতে সাজুড়িয়া গ্রামের পুকুরপাড়ের ছোট্ট ঘরে প্রেমিকা শিরিন বেগমের হাতে খুন হন পাহারাদার আবদুস সালাম। রোববার (১০ মে) সকালে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে সেদিনই শিরিন বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের জেরার মুখে তিনি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে সোমবার (১১ মে) তাকে আদালতে তোলা হয়।
শিরিন এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের নামও জানিয়েছেন। তার দেয়া তথ্যমতে সোমবার সন্ধ্যায় সাজুড়িয়া গ্রামের কেফা, সেলিম ও রুস্তম নামের আরও তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সালাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় এ তিনজনকেও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার (১২ মে) তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম জানান, শিরিন বেগম সোমবার রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল মাহমুদের আমলী আদালত-২ এ ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে তিনি জানিয়েছেন, পরকীয়া প্রেমের পর বিয়ে না করায় প্রেমিক সালামকে খুন করেছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, গলায় রশির ফাঁসের দাগ ও রক্তাক্ত অবস্থায় সালামের লাশ উদ্ধারের পরই রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপর হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়া শিরিন বেগমকে আটক করা হয়। তকে মূলত অবৈধ সম্পর্কের জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।
তবে পুলিশ বলছে, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রায় দুই বছর আগে স্বামী পরিত্যাক্তা শিরিন বেগমের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন প্রেমিক সালাম। কিন্তু শিরিন বিয়ের কথা বললে প্রেমিক সালাম কৌশলে এড়িয়ে যেতেন। গত শনিবার (৯ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুকুরপাড়ের একটা ঘরে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হন সালাম ও শিরিন। পরে শিরিন বিয়ের কথা বললে সালাম রেগে যান। এ সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে শিরিন কাঠের বাটাম দিয়ে সালামের মাথায় জোরে আঘাত করেন। এতে সালাম আহত অবস্থায় পড়ে থাকলে শিরিন তার পরিচিত কেফা, সেলিম ও রুস্তমকে ডাকেন। তারা আসার পর সালামের মাথায় আঘাত করেন এবং গলায় রশি পেঁচিয়ে ফাঁস দেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। হত্যার রহস্যও উদঘাটন হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হবে এবং দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *