অনলাইন ডেস্কঃ মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন চলছে ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে। তবে চলমান এই লকডাউনের ফলে উৎপাদন হলেও বন্ধ রয়েছে আলুর বিক্রি ও সরবরাহ। যার ফলে পচেঁ যাচ্ছে সব আলু। আর তাই আলুর পচেঁ যাওয়া ঠেকাতে জনগণকে বেশি বেশি করে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা আলু ভাজা খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার। ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ ফ্রেঞ্চ ফ্রাই রক্ষায় তাই ভোক্তাদেরই এগিয়ে আসার অনুরোধ জানালো দেশটি।
বেলজিয়ামের ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার হলো এই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। প্রতিবছর কেবল মাত্র রপ্তানির জন্য ৫ মিলিয়ন টন আলু প্রক্রিয়াজাত করে ব্রাসেলস। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এখন সব লকডাউন থাকায় ভেঙে পড়েছে সরবরাহ ব্যবস্থা। ফলে গুদামেই পঁচছে বেশিরভাগ শস্য, খবর টাইম ম্যাগাজিন।
বেলজিয়ামে আলুর বাম্পার ফলন হলেও, প্রক্রিয়াজাত করতে পারেনি সাড়ে ৭ লাখ টন শস্য। লোকসান মোকাবেলায়, বাধ্য হয়েই ভোক্তাদের সহযোগিতা চাইলো দেশটির উৎপাদক জোট।
দেশটির আলু উৎপাদক জোটের মহাসচিব রোমেইন কুলস বলেন, বেলজিয়ানরা তাদের আলুভাজা বেশ ভালোবাসেন। এটা নিজস্ব সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের অংশ। তাই, জনগণকে বলবো- অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে এবং খাবার অপচয় নষ্টে একটু বেশি করে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কিনুন। নয়তো আমাদের কৃষকরা এই মৌসুমে ১২০ থেকে ১৩০ মিলিয়ন ইউরোর লোকসান গুণবে।
২০১৭ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐহিত্যের তালিকাভুক্ত হয় বেলজিয়ামের ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। এই স্বীকৃতির জন্য বহুদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো দেশটি।
মজার ব্যপার হচ্ছে, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নাম শুনেই অনেকে ফ্রান্সের নাম মনে আনেন। তবে এ খাবারটি উৎপত্তি ও প্রচলনের পেছনে একদমই ফ্রান্সের কোনো ভূমিকা নেই! ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এর সর্বপ্রথম উৎপত্তি হয় বেলজিয়ামে। আর এ খাবারটি সবচেয়ে জনপ্রিয় যুক্তরাষ্ট্রে।
বিশ্বজুড়ে ফ্রেন্স ফ্রাই এর সবচেয়ে বড় প্রস্তুতকারক হচ্ছে ম্যাকডোনাল্ডস! পৃথিবীতে উৎপাদিত মোট আলুর প্রায় ৭ শতাংশই তারা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরিতে ব্যবহার করে। পৃথিবীজুড়ে মোট বিক্রীত ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের এক তৃতীয়াংশই বিক্রি করে ম্যাকডোনাল্ডস!
উল্লেখ্য, মিডিয়াম সাইজের এক প্যাকেট ফ্রেঞ্চ ফ্রাইতে যে পরিমাণ ক্যালোরি থাকে তা পোড়াতে হলে আপনাকে অন্তত ৪৭ মিনিট দৌড়াতে হবে কিংবা ৫৮ মিনিট সাইক্লিং করতে হবে!