যৌন হয়রানি করে নির্জন কক্ষে তরুণীকে দিয়ে শরীর ম্যাসেজ, চিকিৎসক গ্রেফতার!

নিজস্ব প্রতিনিধি :: ক্লিনিকে কর্মরত এক সুন্দরী তরুণীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ওই ক্লিনিকের চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনাটি ঘটে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায়।

গত মঙ্গলবার (০৯ জুন) আনুমানিক দুপুর ১টার দিকে ওই চিকিৎসককে উপজেলার পাবলিক মাঠ সংলগ্ন জাহাঙ্গীর টাওয়ারের ৩য় তলা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত ওই চিকিৎসকের নাম ডা. মো. শাহ আলম (৬৫)। তার বাড়ি উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের দাশপাড়া গ্রামে। তিনি পূর্বে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাউফল হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ্যান্ড ক্লিনিকের এনেসথেসিয়ার চিকিৎসক ও ওই ক্লিনিকের পরিচালক মন্ডলীর একজন সদস্য। 

তরুণীর দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত বাউফল হেলথ কেয়ার ডায়গনষ্টিক সেন্টার এ্যান্ড ক্লিনিকে কর্মরত ফিজিসিয়ান এক তরুণী কর্মীকে প্রায়ই যৌন হয়রানি করতেন চিকিৎসক ডা. মো. শাহ আলম। এ নিয়ে যখনই ওই তরুণী এই যৌন হেনস্তার প্রতিবাদ করতেন তখনই তাকে চাকরিক্ষেত্র থেকে বের করে দেওয়ার ভয় দেখানো হতো। এ সুযোগে ওই চিকিৎসক তরুণী কর্মীকে নানান অজুহাতে হয়রানির মাত্রা বৃদ্ধি করে।

গত সোমবার (৭জুন) চিকিৎসক শাহ আলম ওই তরুণীকে ক্লিনিকের একটি নির্জন কক্ষে ডেকে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে শরীর ম্যাসেজ করায়। এ বিষয়ে ওই তরুণী ক্ষুদ্ধ হয়ে ক্লিনিকের অন্য পরিচালকের কাছে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত করলেও কোনো প্রতিকার পাননি। অথচ এই হয়রানীর বিষয়টি যাতে ওই তরুণী কোথাও প্রকাশ না করে এবং প্রতিষ্ঠানের নাম না ক্ষুন্ন হয় এর জন্য উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এন এম জাহাঙ্গীর হোসেনও তাকে হুমকি দেন।

এক পর্যায়ে এসব থেকে অতিষ্ট হয়ে ওই তরুণী গত সোমবার রাতে ডা. শাহ আলম ও বাউফল হেলথ কেয়ার ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এ্যান্ড ক্লিনিকে পরিচালক মো. জলিল ও হুমকিদাতা এন এম জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে বাউফল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এরপর মামলা সূত্রে ওই রাতেই পটুয়াখালী সার্কেলের (বাউফল) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে ডা. শাহ আলমকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওই চিকিৎসক জাহাঙ্গীর টাওয়ারের ৩য় তলার ঘরের দরজা আটকিয়ে ভিতরে আত্মগোপন করেন। ঘরের দরজা না খোলায় তাকে সহজেই গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি পুলিশের। এরপর সারারাত পুলিশ তার বাসা ঘেরাও করে রাখে। পরের দিন উপজেলার পাবলিক মাঠ সংলগ্ন ওই টাওয়ার থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের কাছ থেকে  জানতে চাইলে প্রতিবেদকে জানান, অভিযুক্ত ওই চিকিৎসককে গ্রেফতার করে পটুয়াখালী আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। 

Similar Posts